ফেনীতে বন্যায় জেলার অধিকাংশ পুকুর ও ঘেরের মাছ পানিতে ভেসে গেছে। ভয়াবহ এই দুর্যোগে মৎস্য খাতে রেণু, পোনা, বড় মাছ ও পুকুরের অবকাঠামো মিলে ২৮ কোটি ৯ লাখ ২০ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বুধবার (২৮ আগস্ট) জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
জেলা মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েকদিনে জেলার ছয়টি উপজেলায় বন্যায় মাছ চাষিদের ২৮ কোটি ৯ লাখ ২০ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এ সংশ্লিষ্ট অন্তত ২০ হাজার মানুষ। বন্যার পানিতে ভেসে গেছে একক ও যৌথ মালিকানাধীন ১৮ হাজার ৭৬০টি পুকুর-দিঘি। এসব পুকুর থেকে ২২ কোটি ৬৪ লাখ টাকার বড় মাছ এবং ৯৭ লাখ টাকার মাছের পোনা ভেসে গেছে। এ ছাড়া জেলায় খামারিদের ৫৪ লাখ টাকার অবকাঠামো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
বীরচন্দ্র নগর এলাকার মৎস্য খামারি মো. দুলাল বলেন, নদীর পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুকুরের চারপাশে নেট জাল দিয়ে ঘিরে রেখেছিলাম। কিন্তু বাঁধ ভেঙে পানির তীব্র স্রোতে এটি কোনো কাজে আসেনি। সবকিছু পানিতে ভেসে গেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি আমাদের পাশে না দাঁড়ায় তাহলে কোনোভাবেই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব নয়।
ফুলগাজীর ঘনিয়ামোড়া এলাকার মাছ চাষি হাসিবুর রহমান বলেন, আগের বন্যার চেয়ে এবার পানির চাপ অনেক বেশি ছিল। মাত্র দেড়মাসের ব্যবধানে তৃতীয় দফায় বন্যার পানিতে সব ভেসে গেছে। ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার আগেই বারবার লোকসান গুনতে হচ্ছে। অনেকেই ব্যবসা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।
এ ব্যাপারে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, বন্যার পানিতে অবর্ণনীয় ক্ষতি হয়েছে। খামারিরা মাত্র দেড় মাসের মাথায় তৃতীয় দফার বন্যায় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। তবে অন্যান্য দপ্তরের মতো মৎস্য বিভাগের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের পরামর্শ ব্যাতিত কোনো ধরনের আর্থিক সহায়তা বা প্রণোদনার সুযোগ নেই বলে জানান এ কর্মকর্তা।